সর্বশেষ আপডেট

স্বাস্থ্য

প্রযুক্তি

ভিডিও

From our Blog

Showing posts with label মত-দ্বিমত. Show all posts
Showing posts with label মত-দ্বিমত. Show all posts

Wednesday 4 May 2016

স্বার্থপরতার নানা রূপ


যিনি সবসময় নিজের স্বার্থকে বড় করে দেখে তাকেই বলে স্বার্থপর বা সেলফিস । 

আমরা কথায় কথায় প্রায়ই একে অন্যেকে বলি স্বার্থপর। 

আমরা এ শব্দটিকে নেতিবাচক হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। এটা অনেকটা গালিগালাজের পর্যায়ে ধরে নেওয়া হয়, অবশ্য ভদ্র মানুষের গালি। তবে পৃথিবীর ধ্রুব সত্য হলো মানুষ মাত্রই কম বেশি স্বার্থপর। 

শুধু কী মানুষ, প্রাণী জগতের সবাই আপন স্বার্থকেই বড় করে দেখে। মানুষ সহ প্রতিটি প্রাণীর মাঝেই ‌'সেলফিস জিন' বলে একধরণের উপাদান আছে। যা প্রাণীদের নিজের প্রতি পক্ষপাতে প্রলুব্ধ করে। নিজের সুরক্ষা আর নিরাপত্তাকেই সব প্রাণী অগ্রাধিকার দেয়। ‌এ নিয়ে হয়েছে অনেক গবেষণা। বিজ্ঞানী রিচার্ড ডকিন্স স্বার্থপরতার কারণ বিশ্লেষণ করে লিখেছেন 'সেলফিস জিন' নামে একটি গ্রন্থ। এতে তিনি নানা ত্বত্ত্বের মাধ্যমে বলেছেন মনো ও শরীরবৃত্তীয় স্বার্থপরতার নানা রূপ সম্পর্কে। তার দাবী, স্বার্থপরতার জিন নিয়েই প্রতিটি প্রাণী পৃথিবীতে আসে। এই স্বার্থপরতার জিন-ই প্রাণীর অধিকাংশ কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণ করে। বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন প্রতিটি প্রাণী নিজেকে নিয়েই সবচেয়ে বেশি ভাবে। 

মানুষের ভেতরেও আছে এই ‌'সেলফিস জিন'। কাজেই কোনো মানুষই স্বার্থপরতার উর্দ্ধে নয়। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার মনোবিজ্ঞানীদের দাবী, স্বার্থপর হলেই নাকি সুখি হওয়া যায়। 

সব মানুষই সুখি হতে চায়। আর সুখি হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো স্বার্থপর হওয়া।যদিও আমরা জানি জানি, অন্যের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করার নাম সুখ। প্রাচ্যের সেই ধারনাকে ভেঙ্গে দিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার মনোবিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, সুখি হবার জন্য স্বার্থপরতা জরুরী। অর্থাৎ আপনি যদি স্বার্থপর না হোন তাহলে সুখি হিতে পারবেন না। তবে শর্ত হল এর জন্য অপরাধবোধকে পরিহার করতে হবে। 

সম্প্রতি ডেইলি টেলিগ্রাফে এ বিষয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্যের সুবিধার জন্য কিছু করতে গিয়ে নিজে কিছুটা সুবিধাবঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে কেউই সেটা করে না। সব মানুষই চায় পূর্ণ সুযোগটুকু নিজে একা পেতে। সে ক্ষেত্রে অন্যের ক্ষতি করতেও কেউ কেউ পিছপা হয় না। তবে সেটা নিয়ে যদি কারও মনে যতক্ষণ অপরাধবোধ দেখা না দেয়; ততক্ষণ সে কিছু অর্জনের আনন্দে বিভোর থাকে। আর এর প্রধান কারণ হিসেবে তারা আত্মকেন্দ্রিকতাকে দায়ী করেন। তবে সাধারণত এমনটা ঘটলেও ব্যতিক্রম দেখা যায়। পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১৬ স্নাতক শিক্ষার্থীদের ওপর গবেষণা চালিয়ে এমন তথ্য দেন মনোবিজ্ঞানীরা। 

সম্প্রতি আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, স্বার্থপর ও আগ্রাসী মনোভাব বিশিষ্ট মানুষেরা নেতা হিসেবে অনেক বেশি সাফল্য পান। পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রেও তাঁরা দ্রুত পদোন্নতি পান। গবেষণাটি যৌথভাবে চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেলগ স্কুল অব ম্যানেজমেন্ট, স্ট্যানফোর্ড গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব বিজনেস এবং কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যাপার স্কুল অব বিজনেস। এই গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি স্বার্থপর ও আগ্রাসী মনোভাবসম্পন্ন ব্যক্তিরা কম আকর্ষণীয় চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তির চেয়ে নেতৃত্বে এগিয়ে থাকেন। তাঁরা পদোন্নতি পাওয়ার ক্ষেত্রেও অন্যদের চেয়ে অনেক এগিয়ে। স্বার্থপর ও আগ্রাসী মনোভাবকে শক্তিমত্তার প্রকাশ হিসেবে দেখা হয় বলে গবেষণায় বলা হয়েছে। 

কেলগ স্কুল অব ম্যানেজমেন্টের গবেষক রবার্ট লিভিংস্টোন বলেন, ‘স্বার্থপরতা মানুষের মধ্যে কর্তৃত্বপরায়ণ মনোভাব জাগিয়ে দেয়। বিশেষ করে যখন প্রতিযোগিতার বিষয় থাকে, তখন এই মনোভাবই মানুষকে নেতা হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করে।’ 

স্বার্থপরতাকে অনেকেই নেতিবাচকভাবে দেখেন । কেউ আবার এটাকে অপরাধের সমতুল্য বলে মনে করেন। অথচ জন্মের সাথে সাথেই স্বার্থপরতার জীন মানুষের সঙ্গী। আমরা সবাই স্বার্থপর বিভিন্ন ভাবে ও ক্ষেত্রে । কিন্তু বাইরে এমন একটা ভাব করি যেন দয়ার সাগর। 

জীবনে সফল হতে হলে আসলে স্বার্থপর হওয়ার প্রয়োজনও আছে। স্বার্থপর না হলে জীবনের আনন্দ থেকেই আমরা বঞ্চিত হতাম । আমাদের জীবনটাই থেমে যেত । এটা না থাকলে আমি অন্যের চেয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতাম না , ভালো থাকার চেষ্টা করতাম না , ভালো থাকতেও পারতাম না । 


স্বার্থপর হওয়াটাকে তাই আমি দোষের কিছু বলে মনে করি না। সফল হওয়ার জন্য অবশ্যই এই মনোবৃত্তির প্রয়োজন আছে। তবে কিছু কিছ স্বার্থপরতা অবশ্যই এড়ানো উচিত। অন্যের ক্ষতি করে নিজের স্বার্থরক্ষা কখনোই ঠিক নয় । স্বার্থপরতা তখনই দোষের হয় যখন তা 'আমি' বা 'আমার' সীমানা পার হয়ে অন্যের স্বার্থের ক্ষতি করে । অন্যের ক্ষতি না করেও স্বার্থপর হওয়া যায় । 


স্বার্থপরতায় আসলে ভালো-মন্দ দু-দিকই আছে। নিজের স্বার্থরক্ষা করতে গিয়ে যেখানে অন্যের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না, সে রকম স্বার্থপর হতে কোনো বাঁধা নেই। আপন স্বার্থরক্ষা করতে গিয়ে অন্যের সর্বনাশ করা অবশ্যই অন্যায়।

Tuesday 3 May 2016

মাযহাব কি ও কেন এবং মাযহাব নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক প্রশ্নগুলোর জবাব

মাযহাব কি ও কেন এবং মাযহাব নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক প্রশ্নগুলোর জবাব


মাযহাব কি ও কেন এবং মাযহাব নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক প্রশ্নগুলোর জবাব



মাযহাব কি এবং কেন ? মাযহাব মানা কি জরুরি?

মাযহাব কি এটা জানার আগে প্রথমে জানতে হবে মুজতাহিদ কাকে বলে ?

ইজতিহাদের শাব্দিক অর্থ ==, উদ্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য যথাসাধ্য পরিশ্রম করা। ইসলামী ফেকাহ শাস্ত্রের পরিভাষায় ইজতিহাদ অর্থ, === কোরআন ও সুন্নায় যে সকল আহকাম ও বিধান প্রচ্ছন্ন রয়েছে সেগুলো চিন্তা-গবেষণার মাধ্যেমে আহরণ করা।

মুজতাহিদ= হলেন যারা কুরআন সুন্নাহ, সাহাবাদের ফাতওয়া, কুরআন সুন্নাহ সম্পর্কে বিজ্ঞ ব্যক্তিদের ঐক্যমত্বে এবং যুক্তির নিরিখে কুরআন সুন্নাহ থেকে মাসআলা বেরকারী গবেষক দলের নাম।তাছডা মুজতাহিদ গন বিভিন্ন গুনে গুনান্নীত হতে হয় নিন্মে তার কিছু সংক্ষিপ্ত ধারনা পেশ করা হয়েছে ৷
[ 1] যারা নিষ্ঠার সাথে বিভিন্ন মূলনীতি নির্ধারণ করে কুরআন সুন্নাহর বাহ্যিক বিপরীতমুখী মাসআলার মাঝে সামাঞ্জস্যতা এনেছেন।

[ 2 ] কুরআন সুন্নাহর একাধিক অর্থবোধক শব্দের নির্ধারিত পালনীয় অর্থকে নির্ধারিত করে দিয়েছেন। নতুন উদ্ভূত মাসআলার শরয়ী মূলনীতির আলোকে সমাধান বের করেছেন।
[ 3 ]সেই সাথে নতুন নতুন মাসআলার কোন মূলনীতির আলোকে হুকুম আরোপিত হবে যার বিধান সরাসরি কুরআন সুন্নাহে বর্ণিত নেই, সেই মূলনীতিও নির্ধারিত করেছেন।
[ 4 ] কুরআনে কারীমের কোন আয়াতের হুকুম রহিত হয়ে গেছে, কোন আয়াতের হুকুম বহাল আছে, কোন আয়াত কোন প্রেক্ষিতে নাজিল হয়েছে, কোন আয়াত কাদের উদ্দেশ্য করে নাজিল হয়েছে। কোন আয়াতাংশের প্রকৃত অর্থ কি? আরবী ব্যাকরণের কোন নীতিতে পড়েছে এই বাক্যটি? তা নিধারন করেন ,

[ 5 ]এই আয়াত বা হাদীসে কী কী অলংকারশাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে?

[ 6 ] সেই সাথে কোনটি সহীহ হাদীস কোনটি দুর্বল হাদীস? কোন হাদীস কি কারণে দুর্বল? কোন হাদীস কী কারণে শক্তিশালী?

[ 7] হাদীসের বর্ণনাকারীদের জীবনী জানা থাকা ইত্যাদি

ইজতিহাদের জন্য পাঁচটি শর্ত

হযরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী রহ. ইমাম বাগাবী রহ. সূত্রে বর্ণনা করেন যে, ইজতিহাদের জন্য পাঁচটি শর্ত রয়েছে। যার মধ্যে এ পাঁচটি হতে একটিও কম পাওয়া যাবে, তার জন্য তাক্বলীদ ছাড়া কোন পথ নেই।

- কাঞ্জুল উসূল ইলা মা’রিফাতিল উসূল- ২৭০, উসূলে ফিক্বাহ লি আবি হুরায়রা- ২৩৬, আল মালাল ওয়ান নাহাল- ১/২০০ মিশরী ছাপা।?

১. কোরআনের কোন আয়াত কখন নাজিল হয়, কোন আয়াত নাছেখ (রহিতকারী), কোন আয়াত মানছুখ (রহিত),কোন আয়াত মুজমাল (সংক্ষিপ্ত),কোন আয়াত মুতাশাবেহ ইত্যাদি বিষয়গুলো সবিস্তারে জানার সাথে সাথে কোরআনের নিগুঢ় তথ্যগুলোর সঠিক মর্মগুলি বুঝার পূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে।

২. হুজুর স. কর্তৃক ত্রিশ পারা কোরআনের ব্যাখ্যায় রেখে যাওয়া দশ লক্ষ হাদীস সনদের ভিন্নতাসহ জানা আবশ্যক। আর হাদীসের এ বিশাল ভান্ডার থেকে কমপক্ষে যেসব হাদীস দ্বারা শরীয়তের বিধি-বিধান সাব্যস্ত হয়, সেসব হাদীস সনদ (বর্ণনাকরী), মতন (মূল বিষয়) এবং উক্ত হাদীস সমূহের বর্ণনাকারীদের জীবন ইতিহাস (সাহাবা ও তাবেয়ীনদের জীবনাচার)সহ কন্ঠস্থ থাকতে হবে। তারই সাথে হাদীসের নিগুড় তথ্যগুলি, সঠিক মর্মগুলি বুঝার পূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে। যাতে করে মতবিরোধ বিশিষ্ট মাসআলাসমূহে কোরআন, হাদীস, সাহাবা ও তাবেয়ীনদের নির্দেশিত সীমা অতিক্রম না করা হয়।

৩. মুজতাদি আরবী ভাষা সম্পর্কে দক্ষ ও অভিজ্ঞ হতে হবে। কেননা কোরআন ও হাদীস উভয়টি আরবী। তাই আরবী ভাষা সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা ছাড়া ইজতিহাদ তো দূরের কথা শুধু কোরআন-হাদীসের অর্থ বুঝাও সম্ভবপর নয়। আরবী ভাষায় দক্ষতা অর্জনের জন্য আরবী আভিধানিক অর্থ ও পারিভাষিক অর্থ,নাহু-ছরফ,উসূল,বালাগাতের পূর্ণ দক্ষতা অপরিহার্য।

৪. মুজতাহিদ আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বুদ্ধিমত্তা ও অন্তদৃর্ষ্টি দ্বারা বিশেষভাবে ভূষিত হয়ে অত্যাধিক স্মরণশক্তি ও জ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে। মুজতাহিদের জন্য কেবল সাধারণ বুদ্ধিমত্তাই যথেষ্ট নয়। সাধারণ বুদ্ধিমত্তাতো সকল আলেমেরই থাকে। এতে মুজতাদিরে বিশেষ গুরুত্ব আর রইল কোথায়? মুজতাদি তাক্ব ওয়া ও খোদাভীতি সম্পন্ন হতে হবে। তাকে কখনও মনপূজারী হওয়া চলবে না।

৫. ইজতিহাদ ও মাসআলা চয়নের প্রক্রিয়া সমূহের উপর পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখতে হবে।সূত্র :- তাফসীরে আহমদী, পৃষ্ঠা- ১০১



অথচ হাদীসের শক্তিশালী না হলে তার দ্বারা শরয়ী হুকুম প্রমাণিত হয়না।
এই সকল বিষয়ে প্রাজ্ঞ ব্যক্তি পাওয়া যাওয়া দুস্কর ।সাধারনত অধিকাংশ মানুষই আলেম না। এমন লোক ও আমাদের দেশে সমাজে এমন কি সারা বিশ্বে লক্ষ লক্ষ লোক আছে যারা আরবী আলীফ বা-তা ছা- ও জানেন না , আরবি কোরআন শরীফ পড়তে ও জানেন না অন্য কথা দূরে থাক আর মুষ্টিমেয় যারা আলেম তারাও উল্লেখিত সকল বিষয় সম্পর্কে প্রাজ্ঞ নয়।তাই আমাদের মত সাধারন লোকদের পক্ষে কুরআন সুন্নাহ থেকে সঠিক মাসআলা বের করা অসম্ভব। মূলত সেই গবেষক দলের নাম হল মুজতাহিদ। আর তাদের উদ্ভাবিত মূলনীতির আলোকে বের হওয়া মাসআলার নাম মাযহাব।
একটি উদাহরণ এক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- أقيموا الصلاة তথা সালাত কায়েম কর। আরেক আয়াতে বলেছেন-إِنَّ اللَّهَ وَمَلائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النبي

তথা নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা এবং ফেরেস্তারা নবীজীর উপর সালাত পড়ে। এই আয়াতের শেষাংশে এসেছেيا َيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْه وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا তথা হে মুমিনরা তোমরাও তাঁর উপর সালাত পড় এবং তাঁকে সালাম জানাও। {সূরা আহযাব-৫৬} এই সকল স্থানে লক্ষ্য করুন-“সালাত” শব্দটির দিকে।
তিনটি স্থানে : সালাত: এসেছে। এই তিন স্থানের সালাত শব্দের ৪টি অর্থ। প্রথম অংশে সালাত দ্বারা উদ্দেশ্য হল “নামায” অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা আমাদের নির্দেশ দিলেন যে, তোমরা নামায কায়েম কর। {সূরা বাকারা-৪৩}
আর দ্বিতীয় আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ও তার ফেরেস্তারা নবীজী সাঃ এর উপর সালাত পড়েন মানে হল-আল্লাহ তায়ালা নবীজী সাঃ এর উপর রহমত পাঠান, আর ফেরেস্তারা নবীজী সাঃ এর জন্য মাগফিরাতের দুআ করেন।
আর তৃতীয় আয়াতাংশে “সালাত” দ্বারা উদ্দেশ্য হল উম্মতরা যেন নবীজী সাঃ এর উপর দরূদ পাঠ করেন। (كتاب الكليات ـ لأبى البقاء الكفومى)
একজন সাধারণ পাঠক বা সাধারণ আলেম এই পার্থক্যের কথা কিভাবে জানবে? সেতো নামাযের স্থানে বলবে রহমাতের কথা, রহমতের স্থানে বলবে দরূদের কথা, দরূদের স্থানে বলবে নামাযের কথা। এরকম করলে দ্বীন আর দ্বীন থাকবে না, হবে জগাখিচুরী। এরকম অসখ্যা স্থান আছে, যার অর্থ উদ্ধার করা সাধারনের জন্য কঠিন। তাই একজন বিজ্ঞ, প্রাজ্ঞ ব্যক্তির শরাপন্ন হয়ে তার গবেষনা অনুযায়ী উক্ত বিষয়ের সমাধান নেয়াটাই হল যৌক্তিক। এই নির্দেশনাই আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে দিয়েছেন - {فَاسْأَلوا أَهْلَ الذِّكْر إِنْ كُنْتُمْ لا تَعْلَمُونْ } [النحل:43 তথা তোমরা না জানলে বিজ্ঞদের কাছে জিজ্ঞেস করে নাও। {সূরা নাহল-৪৩}
বিজ্ঞ ফুক্বাহায়ে কিরাম কুরআন সুন্নাহ, ইজমায়ে উম্মাত, এবং যুক্তির নিরিখে সকল সমস্যার সমাধান বের করেছেন। সেই সকল বিজ্ঞদের অনুসরণ করার নামই হল মাযহাব অনুসরন ৷



মাজহাব কি ও কেন?

মাজহাব শব্দের অর্থ – মতামত, বিশ্বাস, ধর্ম, আদর্শ, পন্থা, মতবাদ, উৎস। মিসবাহুল লুগাত (থানবী লাইব্রেরী-২৬২ পৃষ্ঠা)



ইসলামি পরিভাষায় == কোরআন – সুন্নাহর প্রদর্শিত,রাসুল সাঃ ,সিদ্দিকীন,শোহাদায়ে কেরাম ও সতকর্মশীল ব্যক্তিবর্গের মনোনীত পথের নামই হল মাজহাব।

অন্য শব্দে এটাই সিরাতেমুস্তাকিম ও সরল পথ ।সুতরাং মাজহাব কোন নতুনধর্ম,মতবাদ বা কোরআন সুন্নাহ বহির্ভূত ব্যক্তি বিশেষের নিজস্ব মতের নাম নয়, বরং মাজহাব হল কোরআন, সুন্নাহ,ইজমা ও কেয়াসের ভিত্তিতে


বিভিন্ন ধর্মীয় সমস্যার প্রদত্ত সমাধান যা এবিষয়ে বিজ্ঞ ব্যক্তিগণ প্রদান করেছেন। মাজহাব হল , কোরআন -সুন্নাহর তে অঅস্পষ্ট আয়াতও হাদীস গুলুর ব্যাখ্যা মাত্র।সুতরাং কোন ইমাম ই রাসুলের কথার বাহিরে এক কদম ও দেননি । সুতরাং যেহেতু চার মাজহাবই ইসলামের মুল ৪ টি ভিত্তি তথা কোরআন ,সুন্নাহ, ইজমা, ও কিয়াসের আলোকে প্রণীত ।আর এই ৪ টি মাযহাবের ব্যাপারে রাসুলের সাঃ ও সমর্থন ছিল।যা আমরা মুয়াজ রাঃ” এর হাদিসের মাধ্যমে জানতে পারি। তাহলে মাজহাব মানার মানেই হল রাসুলের কথা মানা ।

এখানে একটা প্রশ্ন? কুরআন –সুন্নাহ থাকতে মাযহাব মানার দরকার কি? - হাদিস শরীফে মূলত পাওয়া যায়, কুরআন –সুন্নাহ মানার কথা তাহলে মাযহাব মানার দরকার কি?

হাদিসের কথা অবশ্যই ঠিক ।কিন্তু কুরআন –সুন্নাহর প্রত্যক্ষ –পরোক্ষ , সুস্পষ্ট –অস্পষ্ট ও পরস্পর বিরোধপূর্ণ জটিল বিষয়ের যথাযথ সমাধান বের করে তা অনুসরণ করে মূল লক্ষে যাওয়া সকলের পক্ষে মোটে ও সম্ভবপর নয়। বরং এ সকল বিষয়ে পূর্ণ পারদর্শী ব্যক্তি বর্গের দেওয়া সমাধান মেনে চলেই মূল লক্ষে যাওয়া সম্ভব।

এখানে অনেকে প্রশ্ন করেন, এক সময় বাংলায় কোরআন হাদিস ছিলনা তাই আমরা মৌলবীদের কথা মেনেছি। এখন আর দরকার নাই। কেননা বাংলায় কোরআন ও হাদিসের অনেক বই পাওয়া যায়, তাই আমরা এগুলু দেখে দেখে আমল করব ৷
এদের উত্তরে আমি প্রথমে - বলবো ভাই দেখুন, আপনি হয়ত বাংলা পড়তে পারেন। কিন্তু আমাদের দেশে লাখো মানুষ আছে যারা বাংলা পড়া থাক দূরের কথা তারা তো ক,খ ই চিনেনা এদের কি হবে? এমন আবস্হা পূর্বেও ছিল ,আছে এবং থাকবে ৷ তাছাডা আরবী কোরআন হাদীসতো বাদই দিলাম বিশ্বে এখনও লাখো-কোটি মুসলিম এমনও রয়েছেন যারা আরবী কোরআন হাদীস পড়তে পারেনা ,ব্যখা জানাতো দূরের কথা ৷

দ্বিতীয়ত -শুধু বই পড়েই সব জিনিসের সমাধান দেয়া যায়না । বিশেষ করে ঐ সকল জিনিস যে গুলুর জন্য রয়েছে কিছু নীতি মালা ও কোর্স , প্রশিক্ষণ । যেমন , ডাক্তারি বিষয়গুলু। বাংলায় এবিষয়ে বইয়ের কোন অভাব নেই। বরং ফুটপাথেও পাওয়া যায়। অনুরূপ উকিলি, সংবিধান থেকে নিয়ে সকল আইনের বই কিন্তু কিনতে পাওয়া যায়। এখন বলুন তো কেউ একজন যদি এ বই গুলু কিনে এনে আগা –গোঁড়া মুখস্ত করে ফেলে এবং অনায়াসে বলতে ও পারে , সরকার কি তাকে ডাক্তার / উকিল হিসেবে সার্টিফিকেট দিবে? আর আপনিও সমস্যা নিয়ে তার কাছে যাবেন ? অথবা আপনি নিজে বাংলা পরে নিজের চিকিৎসা ও আইনি বিষয় সমাধান করেন? সেক্ষেত্রে তো ঠিকই বলবেন যে এ গুলো আমার কাজ না। এ প্রশ্নের যে জবাব যারা মাজহাব মানবেনা বলে তাদের ও একি জবাব।

তাছাড়া আমরা সকলের জন্য সমহারে মাজাহাব মানা ওয়াজিব এ কথা ও তো বলিনা । বরং আমরা বলি মাজহাবের রয়েছে বিভিন্ন স্তর । যাদের এজতেহাদ করার ক্ষমতা আছে তাদের জন্য অন্য কারো মাযহাব মানার প্রয়োজন নেই ৷ আর যাদের কাছে এজতেহাদ করার ক্ষমতাতো দূরে থাক কোন কিছু পড়তে ও জানেনা তাদের জন্যই মাযহাব বা তাকলীদ ৷

; আমাদের অনেক ভাই বলেন, মাযহাব মানার কোন দলীল নাই। বরং এটা ভিত্তিহীন, বানানো ,বিদাআত। আসলে কি তাই? তাহলে একটু পযালোচনা করা যাক ,

কথাটি সঠিক নয়। মাযহাব মানার অবশ্যই দলীল প্রমান আছে। আমাদের কে প্রথমে একটা বিষয় পরিষ্কার করতে হবে। তা হল, মাজহাব মানার অর্থ কি? এর একটা অর্থ হতে পারে কোরআন –সুন্নাহ বাদ দিয়ে কোন ব্যক্তির কথা মানা ।
আরেকটা অর্থ হল, ধর্মীয় বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য কোন বিজ্ঞ ব্যক্তির ফায়সালা মেনে নেওয়া। যা তিনি কোরআন –সুন্নাহ কে সামনে রেখে প্রদান করেছেন। তার থেকে বর্ণিত প্রতিটি মাসালায় তিনি কোরআন – হাদিসকে ই প্রাধান্য দিয়েছেন। সুতরাং এদের কথা মানার অর্থই হল , কোরআন হাদিস মানা । মূলত এদেরকে মানা উদ্দেশ্য নয়, এবং মানাও হয়না । বরং তাদের দেখান মূলনীতি অনুযায়ী কোরআন- সুন্নার উপর আমল করা ই উদ্দেশ্য , এবং তাই করা হয়। এমন নয় যে, তারা একেকটা নতুন নিয়ম-কানুন দাড় করিয়েছেন।আর আমরা এ গুলোর অনুসরন করছি। এমনটি হলে আবশ্যই প্রত্যাখান যোগ্য ,যেমনটি করছে ভন্ড পীর গন ৶ সারকথা, দ্বীন মানার জন্য তাদের মাতামত গুলো কে সহায়ক হিসেবে নেয়া হয় মাত্র।



Sunday 1 May 2016

আসুন আবার আদর্শলিপি পড়ি

ম্যারিনা নাসরীন
     
মনে করুন আপনার সামনে একটা সাদা রঙের বিশাল ক্যানভাস। আপনাকে বলা হলো ক্যানভাস আপনি এমন কিছু ঘটনার ছবি আঁকুন, যেগুলো গত এক মাসে আপনি দেখেছেন, শুনেছেন বা পত্রপত্রিকায় পড়েছেন। আমি নিশ্চিত, আপনার ছবিগুলোর মধ্যে আনন্দের খবর যদি ১০ পারসেন্ট থাকে, নিরানন্দের খবর থাকবে ৯০ পারসেন্ট। শুধু গত এক মাস নয়, তার আগের এক মাস, তারও আগের আরেক মাস। এমনভাবে বহুমাস আগের চিত্র একই হবে। এর কার দুই রকম হতে পারে। হয়, আপনি একজন নেতিবাচক চিন্তার মানুষ খারাপ, ঘটনাগুলো চোখে বেশি পড়ে অথবা আসলেই সমাজে নিরানন্দের ঘটনা অনেক বেশি ঘটছে!  

সত্যি বলতে কি, অস্বাভাবিক একটা সময়ের মধ্যে আমরা চলেছি। আমরা ক্রমশ অসামাজিক এবং অনুভূতিবিবর্জিত নিষ্ঠুর প্রাণী হয়ে উঠছি। অ্যাপার্টমেন্ট-সর্বস্ব এই সমাজে মুখোমুখি দুটো ফ্ল্যাটের মানুষ কেউ কারো খবর রাখে না। ছুটির দিনে দুপুরে বা উৎসব পার্বণে পাশের বাড়িতে তরকারির বাটি পাঠানোর সেই রীতি নির্বাসিত হয়েছে অনেক আগেই। প্রতিবেশীর সঙ্গে প্রতিবেশীর আলাপচারিতা নেই, ভাইয়ের সঙ্গে বোনের হৃদ্যতা নেই, এমনকি মা-বাবার সঙ্গে সন্তানের নাড়ির যোগটাও অনেক ক্ষীণ হয়ে এসেছে। যার কারণে বাবা-মায়ের হাতে সন্তান খুন হচ্ছে, সন্তানের হাতে বাবা-মা। এ তো গেল পরিবারের কথা। রাজনৈতিক, সামাজিক  অবস্থা আরো ভয়াবহ। একসময় ছিল ভালো বংশের সন্তানরা নেশায় পড়ে মানুষের জন্য কিছু করতে রাজনীতিতে আসতেন। এখন এটি পেশায় দাঁড়িয়েছে। তাঁরা দেশের মঙ্গলের জন্য যতটা না ভাবছেন, তার চেয়ে অনেক বেশি সময় দিচ্ছেন নিজের সুবিধা আদায় এবং অন্য দলের ছিদ্র খোঁজার কাজে।

ধীরে ধীরে স্বাধীন মতপ্রকাশের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মিথ্যা, অশ্রদ্ধা, পরমত অসহিষ্ণুতা, চটুলতা, কুটিলতা এবং হিংসা-বিদ্বেষের বিষে সমাজ ক্রমেই নীল বর্ণ ধারণ করছে। দুর্নীতি ঢুকে পড়েছে রন্ধ্রে রন্ধ্রে। যার ফলে দেশের অর্থনৈতিক চাকা সামনের দিকে ঘুরছে মনে হলেও তার সুবিধা তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ব্যাপ্তি লাভ করছে না।

আমাদের সমাজে মেয়েরা নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারছে না। ধর্ষণ, খুন, গুম নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। আমরা এসব দৃশ্যে কোথাও স্থির হচ্ছি না। আমাদের দৃষ্টি টিভি থেকে পত্রিকায়, পত্রিকা থেকে সামাজিক নেটওয়ার্কে দৌড়ে বেড়াচ্ছে। অস্থির একটা সময় অতিক্রম করছি আমরা। এবং আমরা একটা সুখের খবর যতটা না প্রচার করছি তার তুলনায় অনেক বেশি প্রচার করছি অসুখের ঘটনার। এই যে একটা অস্থির বলয়, সেটা থেকে আমরা কীভাবে বেরিয়ে আসতে পারি? অভিজ্ঞতা যা বলছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আশা করে লাভ কিছু নেই। বরং আমাদের নিজেদেরই উদ্যোগী হতে হবে। নিজেদের ভঙ্গুর আদর্শকে শুধু মেরামত করলে চলবে না, ছেনি-কাঁচি নিয়ে রীতিমতো সংস্কার করতে হবে। তবেই দম বন্ধ হয়ে আসা এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব। ভেবে দেখুন, সমাজ বা রাষ্ট্রে যারা অন্যায়, অবিচার, পাপে লিপ্ত, তাঁরা প্রত্যেকে কোনো না কোনো মা-বাবার সন্তান। কোনো না কোনো পরিবারের সদস্য এবং তাঁরা আমাদের সমাজেই বাস করেন। সুতরাং সংস্কার শুরু করতে হবে পরিবার থেকে, তারপর সমাজ, রাষ্ট্র। প্রতিবেশীর সন্তানের দোষত্রুটি ধরার আগে নিজের সন্তানটি নির্দোষ কি না সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।

আমাদের বাবা-মায়েরা একসময় বুঝতে শেখার সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের হাতে আদর্শলিপি তুলে দিতেন। ‘সদা সত্য কথা বলিবে, কদাপি মিথ্যা বলিবে না’। ‘জীবে দয়া কর’। ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু’। তখন মানুষ শিশু বয়স থেকেই এসব নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বড় হতো। বর্তমানে শিশুরা অক্ষরজ্ঞানের আগেই মোবাইল ফোনের নাড়ি নক্ষত্র জেনে ফেলে। সেন্ড বাটন, লগইন বাটন চিনে নেয়। টিভির সিরিয়াল থেকে কার্টুন থেকে অথবা পারিপার্শ্বিকতা থেকে জেনে যায় মায়ের সঙ্গে কীভাবে মিথ্যা কথা বলতে হবে। সেটি হয় অপরাধের হাতে খড়ি। কিন্তু মানবজীবনের কোনটি মানবিক আর কোনটি অমানবিক সেটি সম্পর্কে তারা ধারণা পায় না। পরিবার থেকে যারা নৈতিক শিক্ষা পায় না, তারাই পরবর্তীকালে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।

কথায় কথায় আমরা সিভিলাইজেশনের কথা বলি। যথেষ্ট সভ্য হয়েছি বলে বড়াই করি। সভ্যতার চাকা ঘুরতে ঘুরতে আমরা একবিংশ শতাব্দীর ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টাচ্ছি কিন্তু আদৌ কি সভ্য হয়েছি? প্রতিনিয়ত কম্পিউটার আপডেটের সঙ্গে সঙ্গে হয়তো আমরা প্রযুক্তিগতভাবে আপডেট হচ্ছি কিন্তু নৈতিকতার দিকে আমাদের চারিত্রিক আপডেট কি আদৌ হয়েছে? কথা যা ভালো, তার সবকিছু মুহূর্তে মুহূর্তে অতীত হয়ে যাচ্ছে। সেই গানটির মতো ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’।

আসুন ভালো সবকিছুই আমাদের তিনটি কালকেই ঘিরে রাখুক। আমরা আবার আদর্শলিপি হাতে তুলে নিই এবং প্রতিজ্ঞা করি, সদা সত্য কথা বলিব, কদাপি মিথ্যা বলিব না। তর্কালংকারের কবিতা পড়ি এবং সে অনুযায়ী কাজ করি।

সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি

সারা দিন আমি যেন ভালো হয়ে চলি।

ভালো থাকুন সবাই, ভালোবাসায় থাকুন। সত্য এবং সুন্দরের সঙ্গে।

লেখক : গল্পকার
 
কপিরাইট ©২০১৬ Health And Wellness Related Portal
Distributed By : মোহাম্মদ নাবিল . Powered by: প্লাস আইটি