অর্থ-বাণিজ্য

বাজেট বক্তৃতায় ধর্ম বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর অসম্পূর্ণ বক্তব্য

ঢাকা: জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত দেশে উদার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সার্বজনীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় চলমান নানামুখি কার্যমক্রম অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। ধর্মীয় সম্প্রীতি নিয়ে তার গর্বের কথাও বলেছেন। কিন্তু ধর্মীয় উপাসনালয় কেন্দ্রিক উন্নয়নের কথা বলতে গিয়ে শুধু হিন্দু মন্দিরের কথাই উল্লেখ করলেন। মোট মন্দিরের পরিসংখ্যান তুলে ধরার পাশাপাশি মন্দিরভিত্তিক শিশুশিক্ষার প্রসঙ্গটিও তিনি টেনে এনেছেন। আলোচিত জঙ্গিবাদ বিষয়ে সচেতনতা তৈরির বিষয়ে ধর্মীয়গুরুদের মাধ্যমে চলমান উদ্যোগে সহায়তার বিষয়েও কিছু বলেননি অর্থমন্ত্রী। যদিও গত অর্থবছরে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য ছিল তার।

অথচ দেশে মোসলমান ৮৬.৬ শতাংশ, ১২.১ শতাংশ হিন্দু, ০.৬ শতাংশ বৌদ্ধ, ০.৪ শতাংশ খ্রিস্টান এবং ০.৩ শতাংশ অন্যান্য ধর্ম বা সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী মানুষের বাস। অর্থমন্ত্রীর মুখে মসজিদ, গির্জা, প্যাগোডা বা অন্যান্য উপাসনালয়ের নাম শোনা গেল না!

বৃহস্পতিবার বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেন, ধর্মীয় মূল্যবোধে এবং নৈতিকতা বিকাশের মাধ্যমে উদার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সার্বজনীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় আমাদের সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ধর্মীয় সম্প্রীতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে চলমান নানামুখি কার্যমক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। ধর্মীয় সম্প্রীতির পরিবেশ নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি।

তিনি আরো বলেন, দেশে এখন প্রায় ২৪ হাজার মন্দির আছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৫০০ মন্দিরে শিশুশিক্ষার প্রকল্প চালু থাকায় এদের অবস্থা তুলনামূলকভাবে ভালো। বাকিগুলোতে অধিকতর মেরামত ও সংরক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। একটি ‘হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্ট’ অনেক দিন আগেই প্রতিষ্ঠা করা হয়। যার সামান্য আয় থেকে সীমিত পরিসরে মন্দিরগুলোর উন্নয়ন কার্যণক্রম পরিচালিত হয়।

এছাড়া নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দ হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি তীর্থস্থান, যেখানে প্রতিবছর দেশ-বিদেশের অগণিত হিন্দু ধর্মালম্বী পূণ্যস্নান করে থাকেন। তীর্থস্থানটিতে পূণ্যার্থীদের জন্য অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা সম্প্রসারণের প্রয়োজন রয়েছে। এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে ২০১৬-১৭ বাজেটে ২০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।

বাজেট বক্তৃতায় সাংস্কৃতিক ও নৃগোষ্ঠি এবং এসব উন্নয়ের কথা উল্লেখ করা হলেও মসজিদ ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা বা মক্তব এবং অন্যান ধর্মীয় উপাসনালয়ের বিষয়ে কোনো কথা উল্লেখ করা হয়নি।

গত অর্থবছরে (২০১৫-১৬) ধর্ম বিষয়ে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ধর্মান্ধতা, জঙ্গিবাদ, সামাজিক অবক্ষয় ও অনাচারের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইমাম, সেবায়েত, পুরোজিত ও ভিক্ষুদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া, দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মানোন্নয়নের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান চলমান রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button