Results for "নামাজ"
জানাযা নামাজ পড়ার পদ্ধতি
জানাযার নামাজ ফরজে কিফায়া। এ নামাজ মুসল্লিদের জন্য সাওয়াব বর্ধন এবং মৃত ব্যক্তির জন্য সুপারিশ। 

জানাযায় লোক সংখ্যা বেশি হওয়া মুস্তাহাব এবং মুসল্লি সংখ্যা যত বাড়তে ততই উত্তম। তবে কাতার বেজোড় হওয়া উত্তম। 

জানাযার নামাজ মূলত মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া ও ইস্তেগফার। জানাযার নামাজ পড়ার পদ্ধতি তুলে ধরা হলো-

১. প্রথমত মৃত ব্যক্তিকে ক্বিবলার দিকে সম্মুখে রেখে ইমাম ও মুসল্লিদের দাঁড়ানো।

২. মুসল্লীরা নামাজের অজুর ন্যায় অজু করে ইমামের পিছনে ক্বিবলামুখী হয়ে দাঁড়ানো।

৩. মৃত ব্যক্তি পুরুষ হলে ইমাম তার মাথার পাশে দাঁড়ানো। আর মহিলা হলে কফিনের মাঝ বরাবর দাঁড়ানো। মৃত ব্যক্তির মাঝ বরাবর দাঁড়ানোতে কোনো দোষ নেই।

৪. জানাযার নিয়ত করে চার তাকবিরের সহিত নামাজ আদায় করা।

৫. কাঁধ বা কানের লতি পর্যন্ত দু’হাত উত্তোলন করে আল্লাহু আকবার বলে নিয়ত বাঁধা।

৬. অন্যান্য নামাজের ন্যায় ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা।

৭. ছানা পড়া (কেউ কেউ সুরা ফাতিহা পড়ে অন্যান্য সুরা মিলানোর কথা উল্লেখ করেছেন।)

৮. দ্বিতীয় তাকবিরের পর দরূদে ইবরাহিম পড়া।

৯. তৃতীয় তাকবির দিয়ে ইখলাসের সঙ্গে হাদিসে বর্ণিত দোয়াসমূহের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা।

১০. চতুর্থ তাকবির দিয়ে যথাক্রমে ডানে ও বামে সালাম ফিরানোর মাধ্যমে জানাযার নামাজ শেষ করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মৃত ব্যক্তির মাগফিরাত কামনায় এবং নিজেদের সাওয়াব বৃদ্ধিতে সুন্দরভাবে জানাযার নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

news zone
নামায না পড়ার শাস্তি

যারা নামায পড়েনা তাদের জন্য আল্লাহ্ পাক পনেরটি আজাব নির্দিষ্ট করিয়া রাখিয়াছেন।পনেরটি আজাবের মধ্যে ছয়টি দুনিয়ায়, তিনটি মৃত্যুর সময়, তিনটি কবরের মধ্যে এবং বাকি তিনটি হাশরের মধ্যে দেয়া হইবে।

# দুনিয়াতে ছয়টি আযাবঃ
১. তাহার জীবনে কোনরূপ বরকত পাইবেনা।
২. আল্লাহ্ তার চেহারা হইতে নেক লোকের চিহ্ন উঠাইয়া লইবেন।
৩. যে যাহা কিছু নেক কাজ করবে, তাহার ছওয়াব পাইবেনা।
৪. তাহার দোয়া আল্লাহ্ পাকের নিকট কবুল হইবে না।
৫. আল্লাহ্ পাকের সমস্ত ফেরেশতা তাহার উপর অসন্তুষ্ট থাকবে।
৬. ইসলামের মূল্যবান নেয়ামত সমূহ হইতে বঞ্চিত করা হইবে।
# মৃত্যুর সময় আজাব তিনটিঃ
১. অত্যন্ত দুর্দশাগ্রস্ত হইয়া মৃতু্যবরণকরিবে।
২. ক্ষুধার্ত অবস্থায় মৃত্যু বরন করিবে।
৩. মৃত্যুকালে তাহার এত পিপাসা পাইবে যে,তাহার ইচ্ছা হইবে দুনিয়ার সমস্ত পানি পান করিয়া ফেলিতে।
# কবরের মধ্যে তিনটি আজাবঃ
১. তাহার কবর এমন সংকীর্ণ হবে যে তাহার এক পাশের হাড় অপর পাশের হাড়ের সংগে মিলিত হইয়া চূর্ণবিচূর্ণ হইয়া যাইবে।

২. তাহার কবরে, দিনরাত্রি সবসময় আগুন জ্বালাইয়া রাখা হবে।

৩. আল্লাহ্ তাহার কবরে একজন আজাবের ফেরেশ্তা নিযুক্ত করিবেন। তাহার হাতে লোহার মুগুর থাকবে। সে মৃত ব্যক্তিকে বলতে থাকবে যে,দুনিয়ায় কেন নামায পড় নাই। আজ তাহার ফল ভোগ কর। এই বলিয়া ফজর নামায না পড়ার জন্য ফজর হইতে জোহর পর্যন্ত, জোহর নামাযের জন্য জোহর থেকে আছর পর্যন্ত, আছরের নামাযের জন্য আছর থেকে মাগরিব পর্যন্ত, মাগরিবের নামাযের জন্য মাগরিব হইতে এশা পর্যন্ত এবংএশার নামাযের জন্য এশা হইতে ফজর পর্যন্ত লোহার মুগুর দ্বারা আঘাত করতে থাকবে।
আমাদের মধ্যে যারা মুসলিম আছে আসুন ভাই আমরা সকল ভাই ও বোনেরা নিয়মিত এবং সময়মত নামাজ পড়ি, অপর ভাইদের ও বলি নামাজ পরার জন্য। তাহলেই একমাত্র আমাদের সমাজ এ প্রকৃত শান্তি ও মুক্তি আসবে।
আরেকটা কথা আপনাদের মধ্যে যেসব ভাই/বোনেরা না পড়ে লাইক করেন তাদের বলছি,ভাই দয়া করে আগে পড়ুন আমরা চাই আমাদের আসব পোস্ট থেকে যেন আপনারা উপকৃত হন, আপনরা যেন কিছু শিখতে পারেন ,তাহলে আমরা সওয়াব পাব আর আপনা্রাতো পাবেনই ।
তাই ভাই দয়া করে আগে পড়ুন তার পর যদি ভাল লাগে তাহলে লাইক দিন। আর ভাই আপনারা এই পোস্ট শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের ও জানার সুযোগ করে দিতে পারেন।

news zone
নামাজে যা কিছু পড়ি তার পুরো অর্থ


আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের উপর যে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত/নামায ফরজ করেছেন তা আমরা বুঝে পড়ি না বা বোঝার চেষ্টাও করিনা(সালাত/নামায কেন এবং কীভাবে পড়বো তাও হয়তো জানি না)। হাশরের ময়দানে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নামাযের হিশাবই সর্বপ্রথম নিবেন।
তাই আমাদের সকলকে নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। নিচে নামাযে আমরা কী পড়ি সে সম্পর্কে সংক্ষেপে তুলে ধরা হল।
১. বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। অর্থঃ পরমকরুনাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
২. তাকবীরে তাহরীমাঃ উচ্চারণঃ আল্লাহু আকবার অর্থঃ আল্লাহ সবচেয়ে বড়।
৩.ছানাপড়াঃ উচ্চারণঃ সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওবিহামদিকা ওতাবারাকাছমুকা ওতাআ‘লাজাদ্দুকা ওলাইলাহাগইরুক। অর্থঃ আয়আল্লাহ! আমি তোমারই পবিত্রতা বর্ণনা করিতেছি তোমার প্রশংসার সহিত, বরকতময় তোমার নাম। সুউচ্চ তোমার মহিমা। এবং তুমি ভিন্ন কোন মা‘বুদনাই।
৪.আউযুবিল্লাহ পড়াঃ উচ্চারণঃ আউযুবিল্লা হিমিনাশ শায়তানির রাঝিম। অর্থঃ আমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
৫. সূরায়ে ফাতিহা পড়াঃ উচ্চারণঃ (১)আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন, (২)আররাহমানির রাহিম, (৩)মালিকি ইয়াওমিদ্দিন, (৪)ইয়্যাকা না‘বুদু ওইয়্যাকা নাসতাঈন, (৫)ইহদিনাসসিরাতাল মুসতাকীম, (৬)সিরাতল্লাযিনা আনআমতা আলাইহিম, (৭)গাইরিলমাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দ—লিন।(আমীন)

অর্থঃ (১)সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, (২)যিনি সমস্ত জগতসমূহের সৃষ্টিকর্তা, রক্ষাকর্তা, পালনকর্তা। (৩)যিনি দয়াময়, অত্যন্ত
দয়ালু, যিনি বড় মেহেরবান। (৪)যিনি কর্মফল দিবসের একচ্ছত্র মালিক। (৫)আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদাত করিতেছি এবং তোমারই নিকট সাহায্য প্রর্থনা করিতেছি। (৬)আমাদেরকে দোখাও সঠিক সরল পথ। (৭)তাদের পথ যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করিয়াছ। যারা তোমার অনুগ্রহের পাত্র হইয়াছেন। তাদের পথ নয় যাদের প্রতি তোমার পক্ষ থেকে গযব নাযিল হয়েছে। বিঃ দ্রঃ উক্ত সূরা(ফাতিহা) শেষ করার পর আমীন বলতে হবে এবং সূরা ফাতিহা তথা আলহামদুর সাথে অন্য সূরা মিলানো ওয়াজিব। তবে ফরয নামাযের প্রথম দুই রাকাতে তা নির্দিষ্ট। সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর যে ১০ টি সূরা আমরা অধিক সময় পাঠ করে থাকি, সেগুলো অর্থসহ পেতে ভিজিট করুন।
৬. রুকুর তাসবীহ পড়াঃ উচ্চারণঃ সুবহানা রাব্বিয়াল আযিম।
অর্থঃ আমার মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করিতেছি।
৭. রুকু হইতে উঠিবার সময়ের তাসবীহ পড়াঃ উচ্চারণঃ সামিআল্লাহুলিমান হামিদাহ
অর্থঃ যে আল্লাহর প্রশংসা করিয়াছে, আল্লাহ তাহার প্রশংসা কবুল করিয়াছেন।
৮. রুকু থেকে উঠে দাড়িয়ে থেকে পড়তে হবেঃ উচ্চারণঃ রাব্বানা লাকাল হামদ হামদান কাছীরান ত্বাইয়্যেবান মুবারাকানফিহ। অর্থঃ হে আমাদের প্রতিপালক অধিক অধিক প্রশংসা ও পবিত্রতা তোমারই। (এখানে রাব্বানা লাকাল হামদ পর্যন্ত পড়লেও হবে।)
৯. সেজদায় তাসবীহ পড়াঃ উচ্চারণঃ সুবহানা রাব্বিয়াল আ‘লা।
অর্থঃ আমার মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করিতেছি।
১০. উভয় বৈঠকে(বসা অবস্থায়) তাশাহুদ বা আত্তাহিয়্যাতু পড়াঃ উচ্চারণঃ আত্যাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওস্ সলাওয়াতু ওত্ তয়্যেবাতু আসসালামুআলাইকা আয়্যুহান্নাবিয়্যু ওরাহমাতুল্লাহি ওবারাকাতুহু আসসালামুআলাইনা ওয়া‘লা ঈবাদিল্লাহি সসলিহিনা আশহাদুআল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াশহাদু আন্না মুহাম্মাদাং আবদুহু ওয়ারাসূলুহ।
অর্থঃ সমস্ত মৌখিক ইবাদাত, সমস্ত শারীরিক ইবাদাত এবং সমস্ত পবিত্র বিষয় আল্লাহ তা‘আলার জন্য। হে নবী! আপনার উপর শান্তি ও তাহার বরকতসমূহ নাযিল হউক। আমাদের প্রতি ও আল্লাহ তা‘আলার নেক বান্দাদের প্রতি তাঁহার শান্তি বর্ষিত হউক। আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত আর কোন মা‘বুদ নাই। আমি আরো সাক্ষ্য দিতেছি যে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁহার বান্দা ও রাসূল।
১১.দুরুদ শরীফ পড়াঃ উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা সল্লেআ‘লা মুহাম্মাদিও ও‘য়ালা আলি মুহাম্মদ কামা সল্লেইতা‘আলা ইবরাহিমা ওয়া‘লা আলি ইবরাহিমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিকআ‘লা মুহাম্মাদিও ও‘য়ালা আলি মুহাম্মদ কামা বারাকতা‘আলা ইবরাহিমা ওয়া‘লা আলি ইবরাহিমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ।

অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি রহমত বর্ষণ কর মুহাম্মদ(সা.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতি, যেমন রহমত বর্ষণ করিয়াছ ইবরাহীম(আ.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত ও সন্মানিত। হে আল্লাহ! তুমি বরকত নাযিল কর মুহাম্মদ(সা.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতি, যেমন বরকত নাযিল করিয়াছ ইবরাহীম(আ.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত ও সন্মানিত।

news zone
কখন কোন নামাজ আদায় করা মাকরুহ

সূর্যোদয়ের সময়, মধ্যাহ্নে সূর্যের মধ্যাকাশে অবস্থানকালে এবং সূর্যাস্তের সময় সালাত জায়েয নেই। কেননা, ‘উকবা ইবন ‘আমির (রা.) বলেছেন- তিনটি ওয়াকত রাসূলুল্লাহ্ (সা.) আমাদেরকে সালাত আদায় করতে এবং আমাদের মৃতদের দাফন করতে নিষেধ করেছেনঃ সূর্যোদয় কালে, সূর্য উপরে উঠে যাওয়া পর্যন্ত; মধ্যাহ্ন কালে সূর্য হেলে পড়া পর্যন্ত; আর যখন সূর্য অস্ত যাওয়ার উপক্রম হয়, তখন থেকে অস্ত যাওয়া পর্যন্ত। তার বক্তব্য এর উদ্দেশ্য হলো জানাযার সালাত্।

কেননা (ইজমা দ্বারা প্রমাণিত যে, উক্ত সময়) দাফন করা মাকরূহ নয়। আলোচ্য হাদীছ তার অর্থ-ব্যপকতার কারণে ইমাম শাফিঈ (র.) এর বিপক্ষে প্রমাণ। ফরজসমূহ এবং মক্কাকে বিশিষ্ট করার উদ্দেশ্য এবং ইমাম আবূ ইউসূফ (র.) এর বিপক্ষে প্রমাণ জুমুআর দিন মধ্যাহ্ন কালে নফল সালাত জাইয করার উদ্দেশ্য। ইমাম কুদূরী (র.) বলেন, ওই সময়ে জানাযার সালাত জাইয হবে না। আমাদের বর্ণিত হাদীছের দলীল মুতাবিক। সাজদায়ে তিলাওয়াতও জায়েয হবে না। কেননা, তা সালাতেরই অংশ বিশেষ। তবে সূর্যাস্তের সময় সে দিনের আসর আদায় করা যাবে।

সালাত ওয়াজিব হওয়ার বা হেতু হচ্ছে সময়ের সেই অংশ, যা বিদ্যমান আছে। (অর্থাত্ সালাত শুরুর পূর্ব মুহূর্ত)। কেননা, হেতুর সম্পর্ক যদি সমগ্র সময়ের সাথে হয়, তাহলে সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরে সালাত আদায় করা ওয়াজিব হয়। আর সময়ের বিগত অংশের সাথে যদি সম্পর্কিত হয়, তাহলে শেষ সময়ে সালাত আদায়কারী হয় সালাত কাযাকারী। বিষয়টি যখন এমনই হলো, তবে তো সে যেমন তার উপর ওয়াজিব হয়েছে, তেমনই আাদায় করেছে। আর অন্যান্য সালাত এর ব্যতিক্রম। কেননা সেগুলো পূর্ণাংগ সময়ে ওয়াজিব হয়েছে, সুতরাং অপূর্ণাংগ সময়ে তা আদায় হতে পারে না।

হিদায়া গ্রন্থকার বলেন, জানাযার সালাত ও তিলাওয়াতের সাজদা সম্পর্কে উল্লেখিত নাজাইযের অর্থ হলো মাকরূহ হওয়া। সুতরাং ঐ সময়ে কেউ যদি জানাযার সালাত আদায় করে কিংবা তখন সাজদার আয়াত তিলা্ওয়াত করে উক্ত তিলাওয়াতের সাজদা করে তাহলে জাইয হবে। কেননা, যেমন নাকিস সময়ে তা ওয়াজিব হয়েছে, তেমনি নাকিস সময়ে তা আদায় করা হয়েছে। কেননা জানাযা উপস্থিত হওয়া ও তিলাওয়াত করার মাধ্যমেই তা ওয়াজিব হয়। ফজরের পরে সূর্যোদয় পর্যন্ত নফল পড়া, এবং আসরের পরে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত নফল আদায় করা মাকরূহ।

কেননা বর্ণিত আছে যে, নবী (সা.) তা নিষেধ করেছেন। তবে এই দুই সময়ে কাযা সালাত ও তিলাওয়াতের সাজদা আদায় করতে পারে এবং জানাযার সালাত আদায় করতে পারে। কেননা, এই মাকরূহ হওয়া ছিলো ফরযের মর্যাদার ভিত্তিতে, যেন সম্পূর্ণ সময়টা সালাতে মশগুল-তুল্য হয়ে যায়। (এই মাকরূহত্ব) সময়ের নিজস্ব কোন প্রকৃতির কারণে নয়। সুতরাং ফরজসমূহের ক্ষেত্রে এবং যে সকল ইবাদত স্বকীয়ভাবে ওয়াজিব হয়েছে, যেমন, তিলাওয়াতের সিজদা, সেগুলোর ক্ষেত্রে সময়ের মাকরূহ হওয়ার হুকুম প্রকাশ পাবে না। আর সালাত (ও মানতকৃত নামায) এর ক্ষেত্রে তা প্রকাশ পাবে।

কেননা উক্ত ইবাদতে আবশ্যকতা তার নিজের পক্ষ থেকে সৃষ্ট কারণের সাথে সম্পৃক্ত। তাওয়াফের রাকাআতদ্বয়ের ক্ষেত্রে মাকরূহ প্রকাশ পাবে। এবং ঐ ব্যক্তির ক্ষেত্রেও মাকরূহ হওয়া প্রকাশ পাবে, যে নফল সালাত শুরু করে তা ভংগ হয়েছে। কেননা উক্ত সালাতের ওয়াজিব হওয়া তার নিজ কারণে নয়, অন্য কারণে। আর তা হলো তাওয়াফ খতম করা এবং শুরু করা সালাতকে নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করা। ফজরের উদয়ের পর ফজরের দু’রাকাআতের অধিক নফল আদায় মাকরূহ।

কেননা সালাতের প্রতি আগ্রহ সত্ত্বেও উক্ত দুই রাকাআতের অতিরিক্ত কিছু নবী করীম (সা.) আদায় করেন নি। সূর্যাস্তের পর ফরযের পূর্বে কোন নফল আদায় করবে না। কেননা তাতে মাগরিবকে বিলম্ব করা হয়। তদ্রূপ জুমুআর দিন ইমাম যখন খুতবার জন্য (হুজরা থেকে) বের হবেন, তখন থেকে খুতবা শেষ হওয়া পর্যন্ত নফল আদায় করবে না। কেননা তাতে খুতবা শোনা থেকে অন্য-মনস্কতা হয়।

news zone
যে নামাজে পাওয়া যাবে পরিপূর্ণ হজ ও ওমরাহর সওয়াব

যে নামাজে পাওয়া যায় পরিপূর্ণ হজ ও ওমরাহর সওয়াব। একটু কষ্ট হলেও ফজরের নামাজ আদায় করে সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকার চেষ্টা করি।

হজরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করে, অতঃপর সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে আল্লাহর জিকিরে থাকে, এরপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করে, সে পরিপূর্ণ একটি হজ ও ওমরাহর সওয়াব পাবে।(তিরমিজি : ৫৮৬)

এ ছাড়াও গোপনে নফল পড়ার ফজিলত অনেক বেশি। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘জনসম্মুখের তুলনায় লুকিয়ে নফল নামাজ পড়ার মধ্যে ২৫ গুণ বেশি সওয়াব।

নামাজের পাশাপাশি সর্বদা মানুষের উপকার করতে হবে এবং এতেও অনেক সোয়াবের অধিকারি হয়া যাবে। মানুষের উপকার করার ফজিলত : রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোনো মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজনে কিছুক্ষণ সময় দেয়া আমার কাছে এক মাস মসজিদে ইতেকাফ করার চেয়েও বেশি পছন্দনীয়। (আল মু’জামুল কাবির : ১৩৬৪৬)

কেউ যদি কন আমল করার নিয়ত করে তবে আমলের নিয়তেও সওয়াব মেলে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যদি কোনো ব্যক্তি রাতে শয়নকালে এই নিয়ত করে যে, সে রাতে উঠে নামাজ পড়বে; কিন্তু প্রচণ্ড ঘুমের কারণে সকাল হয়ে যায়, তাহলে সে তার নিয়ত অনুযায়ী নামাজের সওয়াব পাবে। আর ঘুমটা আল্লাহর পক্ষ থেকে তার জন্য সদকাস্বরূপ হবে। (নাসায়ি : ১৭৮৭)

news zone
চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করার জরুরি কিছু বিধান



আজকাল চেয়ারে বসে নামাজ পড়ার প্রবণতা খুব বেশি দেখা যাচ্ছে। কিছু লোক আরামের জন্য চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করে। কিন্তু শুধু আরামের জন্য বা মামুলি কষ্টের বাহানায় চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করা জায়েয নাই। এমন ব্যক্তির পক্ষে অবশ্যই দাঁড়িয়ে যথা নিয়মে নামাজ আদায় করা ফরজ। যে ব্যক্তি জমিনের উপর বসে নামাজ আদায় করতে সক্ষম তার জন্য শুধু এই বাহানায় চেয়ারে বসে নামাজ পড়া যাবে না যে সে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে বা রুকু-সিজদা করতে অক্ষম। বরং শরীয়ত এমন ব্যক্তিকে বসে নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছে। শুধু ঐ ব্যক্তি চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করবে যে জমিনে বসেও নামাজ পড়তে অক্ষম। এক্ষেত্রে অবশ্যই জানতে হবে-

১. যে ব্যক্তি মাজুর নয়, অর্থাৎ দাঁড়াতে পারে এবং রুকু-সিজদা করতে সক্ষম এমন ব্যক্তির জন্য চেয়ারে বসে নামাজ পড়া জায়েয নেই। এই ব্যক্তি চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করলে তা আদায় হবে না।

২. এমন ব্যক্তি যে স্বাভাবিকভাবে রুকু-সিজদা করতে অক্ষম, কিন্তু জমিনের উপর বসে ইশারায় নামাজ আদায় করতে পারে তার জন্য চেয়ারে বসে নামাজ পড়া মাকরুহ। এমন ব্যক্তি জমিনে বসে ইশারার মাধ্যমে রুকু-সিজদা করবে।

৩. যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে সক্ষম, তবে রুকু-সিজদা করতে পারে না। অবশ্য জমিনে বসে ইশারায় নামাজ পড়তে পারে এমন ব্যক্তির জন্যও চেয়ারে বসে নামাজ পড়া মাকরুহ। এই ব্যক্তি তার সামর্থ অনুযায়ী দাঁড়িয়ে নামাজ শুরু করবে এরপর বাকি নামাজ বসে আদায় করবে।

৪. এমন ব্যক্তি যে জমিনের উপর বসে নামাজ পড়তে অক্ষম, অর্থাৎ সে মোটেও জমিনে বসে নামাজ আদায় করতে পারে না, শুধু এমন ব্যক্তির জন্য শরীয়ত চেয়ারে বসে নামাজ পড়ার অনুমতি প্রদান করেছে। তবে এমন ব্যক্তি চেয়ারে বসে শুধু ইশারার মাধ্যমে নামাজ আদায় করবে; সামনে কোনো টেবিল বা উঁচু তক্তা রেখে সেখানে রুকু-সিজদা করবে না।

নামাজ আদায় করতে হয় বিনয়ের সাথে, বিগলিত চিত্তে। যা দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া অথবা ওজরের সময় বসে নামাজ পড়ার মধ্যে পাওয়া যায়। সুতরাং মসজিদগুলোতে ঢালাওভাবে চেয়ারে বসে নামাজ পড়ার সংস্কৃতি পরিত্যাগ করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সহিভাবে দ্বীনকে জানার ও তদানুযায়ী আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন।

ফয়জুল আল আমীন 
[ফয়জুল আল আমীন- ধ্রুপদী এক লেখক। পুরো নাম- সৈয়দ মুহম্মদ ফয়জুল আল আমীন। প্রবন্ধ-নিবন্ধ, কলাম, সাহিত্য সমালোচনা, গল্প, গবেষণা, কবিতা, ছড়াসহ সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় যার সুদীপ্ত বিচরণ। দেশের প্রথম শ্রেণির প্রায় সব দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক ও ছোটকাগজে নিয়মিত লিখছেন প্রায় ২০ বছর ধরে। ধর্মচর্চার ক্ষেত্রে তাঁর গুরু হলেন বাবা। আর সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে প্রকৃতি। ইসলাম ধর্মের নানা দিক ও বিষয় নিয়ে সুদীর্ঘ গবেষণা করেছেন ফয়জুল আল আমীন। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় রিপোর্টার, ফিচার লেখক, সাব-এডিটর, সহযোগী সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। একাধিক প্রকাশনা সংস্থায় সিনিয়র লেখক, সম্পাদক ও আরঅ্যা-ডি’র প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বর্তমানে পাঠকপ্রিয় একটি সাপ্তাহিকে চিফ রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।]

news zone
নামাজের মধ্যে রাকায়াত সংখ্যা ভুলে গেলে যা করতে হয় ?


মহান আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে থাকেন। কিন্তু অনেকেই আছেন যারা নামাজে অধিক মনোযোগ দেয়ার জন্য অনেক সময় রাকায়াত সংখ্যা মনে থাকে না। নামাজরত অবস্থায় যদি রাকায়াত সংখ্যা ভুলে যান তাহলে আপনি কী করবেন?

প্রথম রাকাত পড়লাম নাকি দ্বিতীয় রাকাত? মনের মধ্যে যদি এমন প্রশ্ন উদিত হয়, তাহলে মন যে দিকে ঝুঁকবে বা সায় দিবে তাই গ্রহণ করতে হবে। আর যদি কোনো দিকেই মন না ঝুঁকে তাহলে কম তথা এক রাকাত ধরতে হবে। তবে এই প্রথম রাকাতে বসে তাশাহহুদ পড়বে, কেননা হতে পারে প্রকৃতপক্ষে এটাই দ্বিতীয় রাকাত। দ্বিতীয় রাকাতেও বসে তাশাহহুদ পড়বে।

তৃতীয় রাকাতেও বসে তাশাহহুদ পড়বে, কেননা হতে পারে এটি চতুর্থ রাকাত। তারপর চতুর্থ রাকাতে সাজদায়ে সাহু করে নিবে। যদি সন্দেহ হয় যে, দ্বিতীয় রাকায়াত পড়লাম, নাকি তৃতীয় রাকাত? তাহলে তার হুকুমও এরূপ। যদি মন কোনো দিকে না ঝুকে তাহলে দ্বিতীয় রাকাত ধরে নিবে এবং এই রাকাতে বসে তাশাহহুদ পড়বে এবং এটা বিতর নামাজ হলে এ রাকাতেও দুয়ায়ে কুনুত পড়বে।


তৃতীয় রাকাতেও বসবে। তারপর চতুর্থ রাকাতে সিজদায়ে সাহু সহকারে নামাজ শেষ করবে। যদি সন্দেহ হয় যে, তৃতীয় রাকাত পড়লাম, নাকি চতুর্থ রাকাত? তাহলে তার হুকুম অনুরূপ। কোনো দিক মন না ঝুঁকলে তিন রাকাত ধরে নিবে। কিন্তু এই তৃতীয় রাকাতেও বসে তাশাহুদ পড়তে হবে। তারপর চতুর্থ রাকাতে সিজদায়ে সাহু সহকারে নামাজ শেষ করবে।

যদি নামাজ শেষ করার পর সন্দেহ হয় যে, এক রাকাত কম রয়ে গেলে কিনা? তাহলে এই সন্দেহের কোনো মূল্য নেই। নামাজ হয়ে গেছে। অবশ্য যদি সঠিকভাবে স্মরণ আসে যে, এক রাকাত কম রয়ে গেছে, তাহলে দাঁড়িয়ে আরও এক রাকাত পড়ে নিবে এবং সিজদায়ে সাহু সহকারে নামাজ শেষ করবে।

কিন্তু যদি ইতোমধ্যে এমন কোনো কাজ করে থাকে যাতে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যায় (যেমন কেবলা থেকে ঘুরে বসে থাকা বা কথা বলে থাকা) তাহলে নতুন নিয়ত বেঁধে সম্পূর্ণ নামাজ পুনরায় পড়তে হবে। আর প্রথম অবস্থায়ও নতুনভাবে নামাজ পুনরায় পড়ে নেয়া উত্তম; জরুরি নয়। শেষ কথা, উপরোক্ত কোন ব্যাখ্যা যদি আপনার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে না হয়, তাহলে আপনি নামাজ ভেঙে পুনরায় নিয়্যত করে নামাজ আদায় করবেন।

news zone

বিজ্ঞাপন

Seo Services